স্যামসাং গ্যালাক্সি এম ১০ রিভিউ

0
স্যামসাং গ্যালাক্সি এম ১০ রিভিউ
 Photo Credit: Samsung  

দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানি 'স্যামসাং' প্রযুক্তি দুনিয়ায় একটা বড়সড় নাম। কিছুদিন আগেও বাজারে লো-মিড রেঞ্জে ফোনের কথা বললেই সবার আগে আসতো শাওমির নাম।

কিন্তু এরকম অবস্থা কি মেনে নেবে অন্যান্য ব্র্যান্ড, অবশ্যই না। বর্তমানে লো-মিড সেগমেন্টে শাওমিকে টেক্কা দিতে উঠে পড়ে লেগেছে অন্যান্য সকল ব্র্যান্ড। এবার তাদের সাথে যুক্ত হলো আরেকটি নাম স্যামসাং।

বাজেট রেঞ্জে বাজার ফিরে পেতে স্যামসাংয়ের নতুন অস্ত্র 'এম' সিরিজ। গত ২৮ই জানুয়ারি স্যামসাং এম ১০ এবং এম ২০ নামে দুটি ফোন রিলিজ দেয় এবং তা বাজারে আসার আগেই যথেষ্ট হাইপ তৈরি করতে সক্ষম হয়।

আজকের পোস্টে মূলত আলোচনা করবো স্যামসাং গ্যালাক্সি এম ১০ ফোনের ভালো খারাপ দিক নিয়ে। গ্যালাক্সি এম ১০ ফোনের দাম ১০ হাজার ৯৯৯ টাকা (২ জিবি)।

বাজেট রেঞ্জে স্যামসাং কি পারবে গ্রাহকদের মন জয় করতে? জানতে হলে পড়ুন আমাদের এই ছোট্ট রিভিউটি।

$ads={1}
আরো পড়ুনঃ


স্যামসাং গ্যালাক্সি এম ১০ রিভিউ

ডিজাইন

ডিজাইনের কথা বললে এক কথায় বলা যায় সবারই ভালো লাগবে ফোনটা। খুবই সুন্দর একটা ডিজাইন ব্যবহার করছে স্যামসাং।

স্যামসাং গ্যালাক্সি এম ১০ ফোনের প্রধান আকর্ষণ হলো ফোনটির ডিসপ্লে। ফোনটিতে স্যামসাং ব্যবহার করছে ইনফিনিটি-ভি ডিসপ্লে, যা এই দামে পাওয়া সবচেয়ে ভালো ডিসপ্লেগুলোর মধ্যে একটি।


স্যামসাং গ্যালাক্সি এম ১০ রিভিউ
Photo Credit: Samsung

ডিসপ্লের উপরে রয়েছে ছোট্ট একটি নচ। ওয়ানপ্লাস ৬টি আর অপ্পো এফ৯ প্রো ফোনে সর্বপ্রথম এই ধরনের নচ দেখা গিয়েছিল। স্যামসাং গ্যালাক্সি এম ১০ ফোনের পিছনের দিকটা প্লাস্টিকের তৈরি।

ফোনটির পিছনের দিকেই রয়েছে স্পিকার গ্রিল। নেই কোন ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর। আমার কাছে মনে হয়েছে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর থাকলে পুরা একটা কমপ্লিট প্যাকেজ হতে পারতো স্যামসাং গ্যালাক্সি এম ১০।

ফোনটির এক্সটার্নাল সিম ট্রেতে দুটি সিম কার্ড ও একটি মাইক্রো এসডি কার্ড একসাথে ব্যবহার করা যাবে।

স্পেসিফিকেশন

স্যামসাং গ্যালাক্সি এম ১০ ফোনে রয়েছে ৬.২২ ইঞ্চি HD+ ইনফিনিটি-ভি ডিসপ্লে। ফোনটির ডিসপ্লে প্যানেল PLS-TFT ক্যাটাগরির যা অনেকটা IPS এর মতোই। তবে খাতা কলমে হিসাব করলে PLS-TFT এর ব্রাইটনেস IPS থেকে তুলনামূলক বেশি।

ফোনটিতে রয়েছে ১৪ ন্যানোমিটার অক্টাকোর এক্সিনোস ৭৮৭০ প্রসেসর যা কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৬২৫ এর সমান পারফরম্যান্স দিবে।

সাথে থাকছে ২/৩ জিবি র‍্যাম ও ১৬/৩২ জিবি ইন্টার্নাল স্টোরেজ। তবে বর্তমানে আমাদের দেশে শুধু ২/১৬ জিবি ভেরিয়েন্টি পাওয়া যাবে।


স্যামসাং গ্যালাক্সি এম ১০ রিভিউ
Photo Credit: Samsung

ছবি তোলার জন্য গ্যালাক্সি এম ১০ ফোনের পিছনে রয়েছে ডুয়াল ক্যামেরা সেট আপ। এর প্রাইমারি সেন্সার ১৩ মেগাপিক্সেলের ও ডেপ্ত সেন্সার ৫ মেগাপিক্সেলের। ফোনটির সামনে রয়েছে ৫ মেগাপিক্সেলের সেলফি ক্যামেরা।

অ্যান্ড্রয়েড ৮.১ ওরিও অপারেটিং সিস্টেম চালিত গ্যালাক্সি এম ১০ ফোনটি চলবে স্যামসাংয়ের নিজস্ব ইউজার ইন্টারফেস স্যামসাং এক্সপেরিয়েন্স ৯.৫ এর উপর। ডিভাইসটির ব্যাটারি ক্যাপাসিটি ৩৪০০ এমএএইচ। সাথে থাকছে ইউএসবি টাইপ-সি কানেক্টিভিটি।

পারফর্মেন্স

এবার আসা যাক পারফর্মেন্সের দিকে। গ্যালাক্সি এম ১০ ফোনটিতে রয়েছে ১৪ ন্যানোমিটার অক্টাকোর এক্সিনোস ৭৮৭০ প্রসেসর যা অনেকটা অবাক করার মতো।

কেনানা এই প্রসেসরটি দেড় বছর আগে অফিসিয়ালি রিলিজ হওয়া ২৭ হাজার টাকার ফোন জে ৭ প্রো তে ব্যবহার করা হয়েছিল। এখন আপনি এই প্রসেসরটি পাচ্ছেন মাত্র ১১ হাজার টাকার ফোনে।

১৪ ন্যানোমিটার অক্টাকোর প্রসেসর থাকায় দৈনন্দিন ব্যবহারে বেশ ভালোই পারফর্মেন্স পাওয়া যাবে ফোনটি থেকে। সাধারণ ইউজারদের জন্য ফোনটি একেবারে পার্ফেক্ট। তবে হেভি ইউজের সময় কিছুটা সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন ২ জিবি র‍্যামের জন্য।

গেমিংয়ের কথা বললে হেভি গেমগুলো বাদে এই বাজেটে যে গেমগুলো চলার কথা সবগুলোই খেলা যাবে। পাবজি খেলা যাবে লো গ্রাফিক্স সেটিং-এ। গেমিংয়ের সময় ফোনটি কিছুটা গরম হয়। তবে তা খুব বেশি যে তা কিন্তু নয়।

ব্যাটারি লাইফ

৩৪০০ এমএএইচ ব্যাটারি দিয়ে গেমিং, ইউটিউবে ভিডিও দেখা, মেসেঞ্জারের সাথে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ব্রাউজিং অর্থাৎ হেভি ইউজে ৬-৭ ঘন্টা ব্যাকআপ পাওয়া যাবে। সাধারণ ব্যবহারে একদিন অনায়াসে ফোনটি চালনো যাবে। ফোনটি চার্জ হতে মোট সময় নেয় আড়াই ঘন্টার মতো।

ক্যামেরা

ছবি তোলার জন্য গ্যালাক্সি এম ১০ ফোনের পিছনে রয়েছে ডুয়াল ক্যামেরা সেট আপ। এই ক্যামেরার প্রাইমারি সেন্সার ১৩ মেগাপিক্সেলের। ওয়াইড অ্যাঙ্গেল ছবি তোলার জন্য সাথে থাকছে ৫ মেগাপিক্সেল ডেপ্ত সেন্সার ক্যামেরা।

এই প্রাইস রেঞ্জে আল্ট্রা ওয়াইড ক্যামেরা আসলেই অবাক করার মতো। ফোনটির সামনে রয়েছে ৫ মেগাপিক্সেলের সেলফি ক্যামেরা যা দিয়ে ফুল এইচডিতে ভিডিও তুলা যাবে।


স্যামসাং গ্যালাক্সি এম ১০
Photo Credit: Samsung

ফোনটির রিয়ার ক্যামেরা দিয়ে কালারফুল ও উজ্জ্বল ছবি তুলা যাবে। ল্যান্ডস্কেপ ছবির জন্য এই ক্যামেরার ওয়াইড এঙ্গেল লেন্স আদর্শ।

কম আলোতেও ঠিকঠাক ছবি উঠনো যাবে এই ক্যামেরা দিয়ে। আমার মতে দামের তুলনায় ক্যামেরা একেবারে আদর্শ। আশা করা যায় বেশ ভালোই পারফর্ম করবে এম ১০ এর ক্যামেরা।

সিকিউরিটি

সিকিউরিটির জন্য ফোনটিতে যে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর নেই তা আগেই বলা হয়েছে। তবে এতে রয়েছে ফেস আনলক। ভালো আলোতে আনলক স্পিড ঠিকঠাকই। তবে আলো কমলে কিছুটা সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন।

মতামত

এই বাজেটে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সরের অনুপস্থিতি ব্যতীত এক কথায় আদর্শ একটি ফোন গ্যালাক্সি এম ১০। ডিজাইন, ইনফিনিটি-ভি ডিসপ্লে, প্রসেসর, ভালো ক্যামেরা, পারফর্মেন্স, ব্যাটারি ব্যাকআপ সব মিলিয়ে গ্যালাক্সি এম ১০ কিনলে আপনি যে ঠকবেন না এটা গেরান্টি দিয়ে বলা যায়।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.
Post a Comment (0)

#buttons=(Accept !) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn More
Accept !
To Top